বিসিএস প্রস্তুতির বিশেষ টিপস
১. আন্দাজে উত্তর করা যাবে না
মো. তরিকুর রহমান মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী বিসিএস পুলিশ, ২৯তম বিসিএস পরীক্ষা
যে বিষয় সহজ মনে হয়, সেটি সবার আগে উত্তর করতে হবে। প্রথমে জানা প্রশ্নগুলোর উত্তর করতে হবে। কঠিন কোনো প্রশ্ন নিয়ে সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে চলে যেতে হবে। আন্দাজে কোনো প্রশ্নের উত্তর করাটা হবে বোকামি। তবে ৭০টি প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত জানা থাকলে ধারণার ওপর ভিত্তি করে বড়জোর আরো ১০টি উত্তর করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোক্রমেই ২০টি নয়। আমার পরিচিত অনেকে প্রিলিমিনারি থেকে বাদ পড়েছে অনুমানের ওপর উত্তর করতে গিয়ে।
২. বাংলা
সাহিত্য ও ব্যাকরণ_দুটি অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে
সানজিদা ইয়াছমিন প্রথম স্থান অধিকারী, বিসিএস প্রশাসন ২৯তম বিসিএস
প্রথমেই বলে নিই, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। ভালো করতে চাইলে কোনো কিছুই বাদ দেওয়া যাবে না। শুরু করতে হবে একদম প্রথম থেকে। বর্ণমালা থেকে শুরু করে ছোটবেলা থেকে পড়ে আসা অনেক বিষয়ও কাজে আসবে। পরীক্ষায় বাংলা ব্যাকরণ এবং ভাষা ও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসে। প্রশ্ন করার সময় দুটি অংশকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যাকরণ অংশে ষত্ববিধান, ণত্ববিধান, কারক ও বিভক্তি, উপসর্গ, সমাস, বাক্য ও বাক্যের অংশ, পদ, সমার্থক ও বিপরীত শব্দ, বিদেশি ভাষার শব্দ এবং বানান থেকে প্রশ্ন আসে। পরীক্ষার হলে এসব বিষয়ে ভালো ধারণা নিয়ে যেতে হবে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অংশে ভালো করতে চাইলে ভাষার উৎপত্তি বা ইতিহাস, প্রাচীন, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের সময়কাল, বিখ্যাত রচনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। প্রাচীন যুগ থেকে প্রায় প্রতিবছরই দুই-তিনটি প্রশ্ন থাকে। প্রাচীন যুগের অন্যতম নিদর্শন চর্যাপদের আবিষ্কার, আবিষ্কারকাল, আবিষ্কারস্থান, পদ রচয়িতা এসব নানা বিষয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। মধ্যযুগের বিখ্যাত রচনা, বিভিন্ন কাব্যের চরিত্র থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিকদের জীবনকাল ও রচনা এবং বইয়ের বিখ্যাত উক্তি বা পঙ্ক্তিও জানতে হবে।
বাজারে প্রচলিত বইয়ে অনেক ভুল থাকে। এ ক্ষেত্রে বোর্ডের বই বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রণীত বই অনুসরণ করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, মাথায় কোনোক্রমেই ভুল তথ্য রাখা যাবে না।
৩. সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিগত বছরের প্রশ্ন থেকেও অনেক প্রশ্ন কমন পড়তে পারে
মহিদুল ইসলাম চৌধুরী তৃতীয় স্থান অধিকারী, বিসিএস ট্যাঙ্ ২৯তম বিসিএস
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অংশে পদার্থ ও রসায়ন থেকেই বেশি প্রশ্ন আসে। গত তিন বছরের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে এমনটিই দেখা গেছে। এ ছাড়া জীববিদ্যা, কৃষি, ভূগোল থেকে দু-একটি করে প্রশ্ন আসে। পদার্থ ও রসায়নে বেসিক ভালো হলেই চলে না, কারণ বেশির ভাগ প্রশ্ন আসে প্রয়োগিক বিষয়ে। এ সময়টাতে গুরুত্ব বুঝে বইয়ের প্রয়োগিক বিষয়গুলো দাগিয়ে পড়লে তা পরীক্ষায় বেশ কাজে দেবে।
নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত ভালো মানের কোনো বই সহায়ক হতে পারে। শেষ সময়টাতে বিগত বছরের বিসিএস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আসা বিজ্ঞানের প্রশ্ন বারবার দেখতে হবে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোনো কোনো প্রশ্নে মনে হতে পারে চারটি উত্তরই সঠিক। এ ক্ষেত্রে বেশিক্ষণ চিন্তা না করে পরের প্রশ্নে চলে যেতে হবে। এ ছাড়া কিছু কিছু প্রশ্ন থাকে, যা অনেক প্রার্থীরই জানাশোনার বাইরে থাকে। বিজ্ঞানের সব প্রশ্নের উত্তর করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। কোনো বিষয়ে ধারণা না থাকলে সেটি বাদ দিয়ে যাওয়াই উচিত হবে।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোতে আসা সমাধান করলে সেটি প্রিলিমিনারির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। বিসিএসসহ পিএসসির বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আগের আসা প্রশ্ন অনেক ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হয়। তাই বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করলে সেখান থেকেও প্রশ্ন কমন পড়তে পারে।
৪. সাধারণ জ্ঞান
বিশ্বের সমকালীন রাজনৈতিক ইস্যু থেকে প্রশ্ন আসতে পারে
ফারুক আহাম্মেদ তৃতীয় স্থান অধিকারী, বিসিএস প্রশাসন ২৯তম বিসিএস
লিখিত পরীক্ষার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার, প্রিলিমিনারির জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নিলে কোনো বিষয়ে ব্যাপক ধারণা তৈরি হয়। এটি সম্ভব হলে সাধারণ জ্ঞান বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে যায়। আগের মতো এখন কেবল বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পড়লেই চলে না, বিষয়ের গভীর থেকেও অনেক প্রশ্ন করা হয়। সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে শেষ সময়ের প্রস্তুতি বলে তেমন কিছু নেই। তবে এ সময়টাতে আগের পড়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বারবার চোখ রাখলে পরীক্ষায় উত্তর শনাক্ত করা সহজ হবে।
সাধারণ জ্ঞানে প্রশ্ন করা হবে বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে। এ দুটি অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে বিভিন্ন শাসনামল, বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, রাজনীতি, ভূগোল_এসব নানা বিষয় থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে দেশ ও মহাদেশ, রাজধানী, মুদ্রা, দীর্ঘতম, বৃহত্তম, ক্ষুদ্রতম_এসব নানা বিষয় থেকে প্রশ্ন থাকে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ (যেমন, কিছুদিন আগে জাপানে ঘটে যাওয়া সুনামি) থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে প্রশ্ন আসার একটি সম্ভাবনা আছে। বিশ্বের সমকালীন রাজনীতি বা আলোচিত ইস্যু থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আরব বিশ্ব ও আফ্রিকার আলোচিত দেশের ঘটনাপ্রবাহ থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। এসব বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে হবে।
৫. গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা
কম সময়ে সমাধান করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে
আয়েশা আক্তার প্রথম স্থান অধিকারী, বিসিএস কাস্টমস ২৯তম বিসিএস
বিগত তিন বছরের বিসিএসের প্রশ্ন দেখলে বোঝা যাবে, একেকবার একেক রকম প্রশ্ন হয়েছে। গণিতে সাধারণত ১০টি করে প্রশ্ন এলেও ৩০তম বিসিএসে এ বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ২০টি। গণিতে যারা দুর্বল, এক ঘণ্টায় তাদের জন্য অন্য বিষয়গুলো কভার করে গণিতের ২০টি প্রশ্নের উত্তর করা কঠিনই বটে। আর গণিত কমন পড়ার কোনো বিষয় নয়। তাই কম সময়ে গণিতের সমাধান করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। চর্চাটা করতে হবে বেশি বেশি।
২৮তম বিসিএসে গণিতের প্রশ্ন করা হয়েছিল ইংরেজি ভাষা-মাধ্যমে। ২৯তমে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষা-মাধ্যমেই। তাই দুইভাবেই উত্তর করার প্রস্তুতি নিতে হবে। ইংরেজিতে প্রশ্ন এলে সহজ হলেও অনেকে প্রশ্ন বুঝে না ওঠার কারণে উত্তর করতে পারে না। ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ইংরেজিতে থাকে। শিক্ষার্থীদের সেসব প্রশ্ন দেখে যাওয়ার পরামর্শ দেব।
প্রিলিমিনারির নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। তবে পাটীগণিত থেকে প্রশ্ন আসে বেশি। অনুপাত, সমানুপাত, শতকরা, লাভক্ষতি, সুদকষা, ঐকিক নিয়ম, কাজ ও সময়, লসাগু, গসাগু, গড় ও সরল থেকে প্রশ্ন থাকে। বীজগণিতের উৎপাদক থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। সূত্রগুলো জানা থাকলে বীজগণিতের উত্তর করা সহজ হয়। বৃত্ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ-জ্যামিতি থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। মানসিক দক্ষতা থেকেও ২৮ ও ২৯তম বিসিএসে প্রশ্ন এসেছে। তাই এ বিষয়েও প্রস্তুতি থাকা ভালো।
মো. তরিকুর রহমান মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী বিসিএস পুলিশ, ২৯তম বিসিএস পরীক্ষা
যে বিষয় সহজ মনে হয়, সেটি সবার আগে উত্তর করতে হবে। প্রথমে জানা প্রশ্নগুলোর উত্তর করতে হবে। কঠিন কোনো প্রশ্ন নিয়ে সময় নষ্ট না করে পরের প্রশ্নে চলে যেতে হবে। আন্দাজে কোনো প্রশ্নের উত্তর করাটা হবে বোকামি। তবে ৭০টি প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত জানা থাকলে ধারণার ওপর ভিত্তি করে বড়জোর আরো ১০টি উত্তর করা যেতে পারে, কিন্তু কোনোক্রমেই ২০টি নয়। আমার পরিচিত অনেকে প্রিলিমিনারি থেকে বাদ পড়েছে অনুমানের ওপর উত্তর করতে গিয়ে।
২. বাংলা
সাহিত্য ও ব্যাকরণ_দুটি অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে
সানজিদা ইয়াছমিন প্রথম স্থান অধিকারী, বিসিএস প্রশাসন ২৯তম বিসিএস
প্রথমেই বলে নিই, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার নির্দিষ্ট সিলেবাস নেই। ভালো করতে চাইলে কোনো কিছুই বাদ দেওয়া যাবে না। শুরু করতে হবে একদম প্রথম থেকে। বর্ণমালা থেকে শুরু করে ছোটবেলা থেকে পড়ে আসা অনেক বিষয়ও কাজে আসবে। পরীক্ষায় বাংলা ব্যাকরণ এবং ভাষা ও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন আসে। প্রশ্ন করার সময় দুটি অংশকেই সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যাকরণ অংশে ষত্ববিধান, ণত্ববিধান, কারক ও বিভক্তি, উপসর্গ, সমাস, বাক্য ও বাক্যের অংশ, পদ, সমার্থক ও বিপরীত শব্দ, বিদেশি ভাষার শব্দ এবং বানান থেকে প্রশ্ন আসে। পরীক্ষার হলে এসব বিষয়ে ভালো ধারণা নিয়ে যেতে হবে।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অংশে ভালো করতে চাইলে ভাষার উৎপত্তি বা ইতিহাস, প্রাচীন, মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের সময়কাল, বিখ্যাত রচনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। প্রাচীন যুগ থেকে প্রায় প্রতিবছরই দুই-তিনটি প্রশ্ন থাকে। প্রাচীন যুগের অন্যতম নিদর্শন চর্যাপদের আবিষ্কার, আবিষ্কারকাল, আবিষ্কারস্থান, পদ রচয়িতা এসব নানা বিষয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। মধ্যযুগের বিখ্যাত রচনা, বিভিন্ন কাব্যের চরিত্র থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আধুনিক যুগের কবি-সাহিত্যিকদের জীবনকাল ও রচনা এবং বইয়ের বিখ্যাত উক্তি বা পঙ্ক্তিও জানতে হবে।
বাজারে প্রচলিত বইয়ে অনেক ভুল থাকে। এ ক্ষেত্রে বোর্ডের বই বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রণীত বই অনুসরণ করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, মাথায় কোনোক্রমেই ভুল তথ্য রাখা যাবে না।
৩. সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিগত বছরের প্রশ্ন থেকেও অনেক প্রশ্ন কমন পড়তে পারে
মহিদুল ইসলাম চৌধুরী তৃতীয় স্থান অধিকারী, বিসিএস ট্যাঙ্ ২৯তম বিসিএস
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অংশে পদার্থ ও রসায়ন থেকেই বেশি প্রশ্ন আসে। গত তিন বছরের বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে এমনটিই দেখা গেছে। এ ছাড়া জীববিদ্যা, কৃষি, ভূগোল থেকে দু-একটি করে প্রশ্ন আসে। পদার্থ ও রসায়নে বেসিক ভালো হলেই চলে না, কারণ বেশির ভাগ প্রশ্ন আসে প্রয়োগিক বিষয়ে। এ সময়টাতে গুরুত্ব বুঝে বইয়ের প্রয়োগিক বিষয়গুলো দাগিয়ে পড়লে তা পরীক্ষায় বেশ কাজে দেবে।
নবম-দশম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত ভালো মানের কোনো বই সহায়ক হতে পারে। শেষ সময়টাতে বিগত বছরের বিসিএস ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় আসা বিজ্ঞানের প্রশ্ন বারবার দেখতে হবে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোনো কোনো প্রশ্নে মনে হতে পারে চারটি উত্তরই সঠিক। এ ক্ষেত্রে বেশিক্ষণ চিন্তা না করে পরের প্রশ্নে চলে যেতে হবে। এ ছাড়া কিছু কিছু প্রশ্ন থাকে, যা অনেক প্রার্থীরই জানাশোনার বাইরে থাকে। বিজ্ঞানের সব প্রশ্নের উত্তর করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। কোনো বিষয়ে ধারণা না থাকলে সেটি বাদ দিয়ে যাওয়াই উচিত হবে।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় বিগত বছরগুলোতে আসা সমাধান করলে সেটি প্রিলিমিনারির প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। বিসিএসসহ পিএসসির বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আগের আসা প্রশ্ন অনেক ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হয়। তাই বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করলে সেখান থেকেও প্রশ্ন কমন পড়তে পারে।
৪. সাধারণ জ্ঞান
বিশ্বের সমকালীন রাজনৈতিক ইস্যু থেকে প্রশ্ন আসতে পারে
ফারুক আহাম্মেদ তৃতীয় স্থান অধিকারী, বিসিএস প্রশাসন ২৯তম বিসিএস
লিখিত পরীক্ষার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার, প্রিলিমিনারির জন্য সেভাবে প্রস্তুতি নিলে কোনো বিষয়ে ব্যাপক ধারণা তৈরি হয়। এটি সম্ভব হলে সাধারণ জ্ঞান বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে যায়। আগের মতো এখন কেবল বহুনির্বাচনী প্রশ্ন পড়লেই চলে না, বিষয়ের গভীর থেকেও অনেক প্রশ্ন করা হয়। সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে শেষ সময়ের প্রস্তুতি বলে তেমন কিছু নেই। তবে এ সময়টাতে আগের পড়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বারবার চোখ রাখলে পরীক্ষায় উত্তর শনাক্ত করা সহজ হবে।
সাধারণ জ্ঞানে প্রশ্ন করা হবে বাংলাদেশ বিষয়াবলি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি থেকে। এ দুটি অংশেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে বিভিন্ন শাসনামল, বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, রাজনীতি, ভূগোল_এসব নানা বিষয় থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলিতে দেশ ও মহাদেশ, রাজধানী, মুদ্রা, দীর্ঘতম, বৃহত্তম, ক্ষুদ্রতম_এসব নানা বিষয় থেকে প্রশ্ন থাকে। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ (যেমন, কিছুদিন আগে জাপানে ঘটে যাওয়া সুনামি) থেকে প্রশ্ন আসতে পারে।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট এ বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, স্বাভাবিকভাবে এখান থেকে প্রশ্ন আসার একটি সম্ভাবনা আছে। বিশ্বের সমকালীন রাজনীতি বা আলোচিত ইস্যু থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। আরব বিশ্ব ও আফ্রিকার আলোচিত দেশের ঘটনাপ্রবাহ থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। এসব বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে হবে।
৫. গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা
কম সময়ে সমাধান করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে
আয়েশা আক্তার প্রথম স্থান অধিকারী, বিসিএস কাস্টমস ২৯তম বিসিএস
বিগত তিন বছরের বিসিএসের প্রশ্ন দেখলে বোঝা যাবে, একেকবার একেক রকম প্রশ্ন হয়েছে। গণিতে সাধারণত ১০টি করে প্রশ্ন এলেও ৩০তম বিসিএসে এ বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল ২০টি। গণিতে যারা দুর্বল, এক ঘণ্টায় তাদের জন্য অন্য বিষয়গুলো কভার করে গণিতের ২০টি প্রশ্নের উত্তর করা কঠিনই বটে। আর গণিত কমন পড়ার কোনো বিষয় নয়। তাই কম সময়ে গণিতের সমাধান করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। চর্চাটা করতে হবে বেশি বেশি।
২৮তম বিসিএসে গণিতের প্রশ্ন করা হয়েছিল ইংরেজি ভাষা-মাধ্যমে। ২৯তমে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলা ও ইংরেজি দুটি ভাষা-মাধ্যমেই। তাই দুইভাবেই উত্তর করার প্রস্তুতি নিতে হবে। ইংরেজিতে প্রশ্ন এলে সহজ হলেও অনেকে প্রশ্ন বুঝে না ওঠার কারণে উত্তর করতে পারে না। ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ইংরেজিতে থাকে। শিক্ষার্থীদের সেসব প্রশ্ন দেখে যাওয়ার পরামর্শ দেব।
প্রিলিমিনারির নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। তবে পাটীগণিত থেকে প্রশ্ন আসে বেশি। অনুপাত, সমানুপাত, শতকরা, লাভক্ষতি, সুদকষা, ঐকিক নিয়ম, কাজ ও সময়, লসাগু, গসাগু, গড় ও সরল থেকে প্রশ্ন থাকে। বীজগণিতের উৎপাদক থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। সূত্রগুলো জানা থাকলে বীজগণিতের উত্তর করা সহজ হয়। বৃত্ত, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ-জ্যামিতি থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। মানসিক দক্ষতা থেকেও ২৮ ও ২৯তম বিসিএসে প্রশ্ন এসেছে। তাই এ বিষয়েও প্রস্তুতি থাকা ভালো।